স্বদেশ ডেস্ক:
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম ও বরিশালে বৃহস্পতিবার দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- বান্দরবানের আওয়ামী লীগ নেত্রী দমে চিং মারমা (২৪) ও স্কুলছাত্রী সুরাইয়া (১৪)।
বান্দরবান সিভিল সার্জন ড. অং সুই জানান, গত সপ্তাহে দমে চিং মারমা জ্বরে আক্রান্ত হয়। স্থানীয়ভাবে পরীক্ষার পর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বান্দরবান হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল সিএসসিআরে ভর্তি করা হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মৃত দমে চিং মারমা সদর ইউনিয়ন ইউনিটের মহিলা আ’লীগের সভাপতি ছিলেন। তার স্বামী উহ্লা চিং মারমা রুমা উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি।
অন্যদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত স্কুলছাত্রীর বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয়েছে। মৃত সুরাইয়া (১৪) বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা গ্রামের বাসিন্দা বাদল মুন্সীর মেয়ে ও হাড়িটানা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক বাকির হোসেন জানান, বুধবার সকালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত সুরাইয়া বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে বুধবার দুপুরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জিহাদ (১৪) নামে ৮ম শ্রেণির আরেক স্কুল শিক্ষার্থী মারা যায়।
যদিও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা কমেছে, তবে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত ডেঙ্গুতে অন্তত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বুধবার জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন ৬৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন ৭৫৩ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী।
দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশের মতো এ বছর বাংলাদেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ দেখা দিয়েছে। যার কেন্দ্রে রয়েছে জনবহুল শহর রাজধানী ঢাকা।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৭৮ হাজার ৬১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছেন ৭৫ হাজার ২২৫ জন।
এখন পর্যন্ত রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ১৯৭টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে সংস্থাটি ১০১টি ঘটনার পর্যালোচনা সমাপ্ত করে ৬০টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে। সূত্র : ইউএনবি।